এইচএসসি পরীক্ষা কে কেন্দ্র করে সারা দেশব্যাপী আন্দোলন চলছে। দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে চলছে এ আন্দোলন। স্বল্প পরিসরের কিছু শিক্ষার্থী এই আন্দোলন পরিচালনা করছে। তাদের দাবি পরীক্ষা দুই মাস পিছিয়ে দেক অথবা ৫০ নম্বরের পরীক্ষা দেওয়া হোক। "২০২২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের গলায় মালা আর আমাদের বেলায় কেন অবহেলা?" এই দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে কিছু পরিসরের শিক্ষার্থী। কিন্তু এ বিষয়টিকে শিক্ষা মন্ত্রী সম্পন্ন না করে দেয়। তবুও দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে কিছু স্বল্পপরিসরের শিক্ষার্থী।
কিছু শিক্ষার্থীরা বোর্ডে গিয়ে আন্দোলন করছে। বোর্ডে গিয়ে আন্দোলন করার ফলে সারা মিলেছে বোর্ডের সচিবদের।এ আন্দোলনে গিয়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। পুলিশ কর্মকর্তারা সহ অনেকেই এই আন্দোলনকে হাস্যকর বিষয় হিসেবে দেখছেন। তাদের প্রধান দাবি ২০২২ ব্যাচ কে আড়াই বছর পড়াশোনার সময় দেওয়া হয়েছিল কিন্তু ২০২৩ এর ব্যাচ কে সময় দেয়া হয়েছে মাত্র ১.৫ বছর।কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বড় বড় জায়গা থেকে এই বিষয়টিকে একদম নাকচ করে দেয়া হয়েছে। অনেক শিক্ষাবিদগণ এই বিষয়কে হাস্যরস হিসেবেই দেখছেন, কারণ এটি কোন পর্যাপ্ত কারণ নয়।
শিক্ষামন্ত্রী তার বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, পরীক্ষা পিছিয়ে দেবার কিংবা ৫০ নম্বরে পরীক্ষা নেওয়ার কোন পরিকল্পনাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেই। পরীক্ষার দশ দিন আগে আন্দোলন করে পরীক্ষা কে পিছিয়ে দেওয়ার দাবি এক ধরনের অপরাধ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমস্ত কিছু প্রস্তুতি নেওয়ার শেষ পরীক্ষা নেওয়ার জন্য। কিন্তু এই সময় এসে শিক্ষার্থীরা বাধা হয়ে আন্দোলন করছে।কিন্তু ১০০ ভাগ পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র এক ভাগ শিক্ষার্থীকে আন্দোলন করতে দেখা যায়নি। কিছু উগ্রপন্থী শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলন করছে। তাদের স্লোগানের রাজনৈতিক বিভিন্ন রকম কায়দা-কৌশলের বিষয় লক্ষ্য করা গিয়েছে। শিক্ষার মত একটি মৌলিক চাহিদাকে রাজনীতিক দৃষ্টিভঙ্গির দিকে নিয়ে গিয়েছে ২০২৩ ব্যাচ এর শিক্ষার্থীরা। বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানাকে তারা হাত করে এ আন্দোলনকে জোরদার করতে চাইছে।
ঢাকা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গাড়ি আটকানোর মতো কাজ করছে শিক্ষার্থীরা রাজপথে। যা কোনভাবেই শিক্ষার্থীদের থেকে কাম্য নয়। শিক্ষার্থীরা উগ্রপন্থীর মত আচরণ করছে বরাবরের মতই। উগ্র-আচরণের কারণে শিক্ষার্থী এবং পুলিশের মধ্যে দন্ডের সৃষ্টি হয়।অপরদিকে আন্দোলনে ভাড়া করে কিছু লোককে নিয়ে এসে আন্দোলন করছে ২০২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। যা একটি সাংবাদিকের ভিডিও ফুটেজে চলে আসে। ভিডিও ফুটেজের ওই শিক্ষার্থী বলতেছিল সে ঢাকা ভার্সিটির শিক্ষার্থী।অথচ ঢাকা ভার্সিটিতে কোন এইচএসসি শাখা নেই। তাই সহজ ভাষায় বলা যাচ্ছে যারা আন্দোলন করছে বা আন্দোলনে যোগদান করছে তারা সকলেই উগ্রপন্থী।তাদের আন্দোলনের বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে তা কখনো শিক্ষার্থীদের থেকে কাম্য নয়।
আন্দোলনের শিক্ষার্থীর পাশাপাশি থাকার কথা ছিল তাদের শিক্ষকদের। কিন্তু তারাই তাদের পাশে নেই। তাদের সিলেবাস যথাসময়ে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু স্বল্প পরিসরের এই শিক্ষার্থীরা আন্দোলনকে আরো কঠোর করে তুলছে। তাদের আন্দোলন করার কথা ছিল তাদের নিজ নিজ কলেজে। কিন্তু সেই আন্দোলন তারা করছে ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান সহ দেশের বিভাগীয় শহর গুলোতে।
কেবলমাত্র চট্টগ্রাম বোর্ডের শিক্ষা সচিব তাদেরকে একটি সান্ত্বনা দিয়েছেন যে, পরীক্ষা ৫০ নম্বরের নেওয়ার সিদ্ধান্ত আসতে পারে। কিন্তু ৫০ নম্বরের পরীক্ষা নিয়ে কখনো শিক্ষার্থীদেরকে যথাযথ মূল্যায়ন করা সম্ভব হবে না। কিন্তু কিছু উগ্রপন্থী শিক্ষার্থীরা এ বিষয়টিকে কোনভাবেই মেনে নিতে চাইছে না। বরং তারা বরাবরের মতোই তাদের আন্দোলনে সজাগ থাকবে বলে বিবৃতি প্রকাশ করে।
যদি তাদের একান্তই পড়াশোনা জন্য আরো সময় চায়, তাহলে সময়কে বৃদ্ধি করা হলে সকল শিক্ষার্থীর উপকারে আসবে। তবে কখনোই পরীক্ষা ৫০ নম্বরের কাম্য বা যথাযথ শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করতে পারবেনা ।এদিকে শিক্ষামন্ত্রী গভীরভাবে এখনো তার নিজ মতামত প্রকাশ করেনি। পরীক্ষার সময় আছে আর মাত্র সাত থেকে আট দিন। এ সময়ে কোনভাবেই সরকার তার সিদ্ধান্ত থেকে সড়তে পারবে না। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে হুমকিও দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।